নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেছেন, ‘সূর্যের আলো নিয়ে চাঁদ আলো দেয়, তেমনি জেলা প্রশাসনের সহকারীরা সূর্যের মতো কাজ করেন বলেই আমরা চাঁদের মতো জনগণের সেবা করতে পারি। অথচ তাদের কাজের পরিধি অনুযায়ী পদোন্নতি হয় না। প্রশাসনের আটটি পদে একই ধরনের কাজ হলেও ভিন্ন নাম দিয়ে বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে। আমি আপনাদের এই যৌক্তিক দাবির বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা করব।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম অফিসার্স ক্লাবে বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি (বাকাসস) আয়োজিত মাঠ প্রশাসনের সহকারীদের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাঠ প্রশাসনে পদবিন্যাসে বৈষম্য, বেতন কাঠামো ও পদোন্নতির বৈষম্য নিরসনের দাবিতে তারা সম্মেলনের আয়োজন করেন। বাকাসস কেন্দ্রীয় অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক এস এ আরিফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম জেলার সহসভাপতি নূরুল মুহাম্মদ কাদেরের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্যসচিব ও জেলা নাজির মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সাল থেকে বাকাসস বৈষম্য নিরসনে আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
২০২১ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের আটটি পদ একীভূত করে ‘সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ২০২২ সালে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আপত্তিতে সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত হয়ে যায় এবং তিন ভাগে বিভাজন করা হয়। এতে নতুন করে বিভেদ সৃষ্টি করে। এ বৈষম্য নিরসনের দাবিতে বাকাসস কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মেলনে জোরালোভাবে উত্থাপিত হয়।
সম্মেলনে বক্তারা বলেন, গবেষণা অনুযায়ী, একজন জেলা প্রশাসক বছরে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার নথি নিষ্পত্তি করেন, যার মূল প্রস্তুতকারী মাঠ প্রশাসনের সহকারীরা। অথচ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা গড়ে ৮-৯ বার পদোন্নতি পান, সহকারীরা পান সর্বোচ্চ একবার।
সম্মেলনে বাকাসসের তিন দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো ২০২১ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আটটি পদ একীভূত করে ‘সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ পদে রূপান্তর করা। ২০১০ সালের প্রজ্ঞাপন অনুসারে অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদকে পুনরায় ‘কম্পিউটার অপারেটর’ পদে রূপান্তর করা।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় অ্যাডহক কমিটির সদস্যসচিব মোহাম্মদ আশ্রাফুল ইসলাম। সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আতাউর রহমান (ঢাকা), মোহাম্মদ হানিফ (কুমিল্লা), এস এম আতিয়ার রহমান (যশোর) আব্দুল বারেক মোল্লা (বরিশাল), আব্দুল মান্নান (ভোলা), এস এম জাকারিয়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া), মাহফুজ আলম (বরিশাল), বাবুল হোসেন (ফরিদপুর), নাহিদুল ইসলাম (সিলেট), স্বপন কুমার দাশ (চট্টগ্রাম), মো. মহসিন (শরীয়তপুর), মাহফুজুল আলম (প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, বরিশাল) এবং সুমন (বান্দরবান)। বাকাসস আয়োজিত কেন্দ্রীয় সম্মেলনে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৪৭ জেলার প্রায় ২৯০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
Leave a Reply